করোনা ভাইরাস সংক্রমণের পরে ধর্মবিশ্বাস / Religion after COVID19
ধর্মবিশ্বাস বহু মানুষের কাছে খুব সংবেদনশীল অংশ। তারা সবসময় ধর্মকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন। তাদের মধ্যে করোনার চেয়েও ভয়ঙ্কর বিশ্বাসের ভাইরাস রয়েছে। বিশ্বাসের ভাইরাসের সম্পর্কে কিছু বলা যাক। যেহেতু ভারতীয় উপমহাদেশে হিন্দু ও ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের প্রাধান্য রয়েছে তাই এই দুই ধর্ম সম্পর্কেই লিখছি। প্রথমে যখন চিনে করোনা সংক্রমণের খবর এলো তখন কট্টর মৌলবাদী মুসলিমরা আনন্দিত হয়ে বলেছিলেন – মুসলিমদের উপর অত্যাচারের পরিমাণে চিনে করোনা মহামারী হয়েছে। করোনা ভাইরাস চিনের উপর আল্লাহর গজব। সহী মুসলিমদের কখনো করোনা হবে না। কাফেররা এই রোগে ধ্বংস হবে। কোরান পড়লে, রোজা রাখলে, নামাজ পড়লেই করোনা ভাইরাস থেকে মুক্তি সম্ভব। এগুলো সম্পূর্ণ অবাস্তব কথা। যদি সত্যিই কোরান পড়ে, রোজা রেখে, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে করোনা নির্মূল করা যেতো তবে মক্কা মদিনা কেন বন্ধ হয়েছে?
অপরদিকে কট্টর হিন্দুরাও ধর্মকেন্দ্রিক কুসংস্কার শুরু করে। তীব্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন হিন্দু মহাসভা প্রচার করে গোমূত্র পান করলে করোনা হবে না। এই জন্য একাধিক স্থানে হিন্দু মহাসভা গোমূত্র পার্টি করে। কেউ কেউ করোনা থেকে বাঁচতে গায়ে গোবর মাখার কথা বলে। বলাবাহুল্য এগুলো সম্পূর্ণ কুসংস্কার এবং এভাবে যে করোনা রোগ প্রতিরোধ সম্ভব এর কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই। ঠিক যে সময়ে পশ্চিমবঙ্গে একজন করোনা আক্রান্ত রোগী ছিল সেই সময় গোমূত্র পান করে অসুস্থ হয়েছিলেন পনেরো জন। এই তথ্যের মাধ্যমে সহজেই বোঝা যায় বিশ্বাসের ভাইরাস কতোটা ভয়ঙ্কর।
এই মহামারী অন্যদিকে জ্যোতিষশাস্ত্রের মৃত্যুঘণ্টা বাজিয়েছে। জ্যোতিষশাত্র (Astrology) ও জ্যোতির্বিজ্ঞান (Astronomy) দুইটা ভিন্ন বিষয়। জ্যোতিষশাত্র সম্পূর্ণ অবাস্তব অবৈজ্ঞানিক, অন্যদিকে জ্যোতির্বিজ্ঞান বিজ্ঞানের বিষয়। Astrology ও Astronomy পাশাপাশি মিলে যায় এমন শব্দ। অনেকেই শব্দদুটির অর্থ জানে না, এটি জ্যোতিষীদের সাধারণ মানুষকে বোকা বানানোর পদ্ধতি। জ্যোতিষীরা জ্যোতিষশাত্রকে বিজ্ঞান বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে। কোনো জ্যোতিষী এতো বড়ো মহামারীর আগাম ভবিষ্যতবাণী করতে পারেনি। বাস্তবে আকাশের গ্ৰহ নক্ষত্রের অবস্থানের সঙ্গে মানুষের ভবিষ্যত ভাগ্যের কোনো সম্পর্ক নেই।
যখন এই মানুষগুলো দেখতে পাবেন এই মৃত্যু মিছিল দেখেও ঈশ্বর-গড-আল্লাহ চুপ করে আছে, যেই ভগবান তাদের বিপদ থেকে রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সেই ভগবান আজ বন্দি, শুধু বিজ্ঞান রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করছে, তখন নিশ্চিতরূপে অনেকের মধ্যে ধর্মবিশ্বাস লঘু হবে, ধর্মীয় উগ্ৰতা কমবে, অনেকেই তথাকথিত কাল্পনিক ঈশ্বর ত্যাগ করবেন। অনেকেই বুঝতে পারবেন ধর্ম কোনো ঈশ্বরের সৃষ্টি না, ধর্ম মানুষের মনগড়া কিছু কাহিনী যার সঙ্গে বাস্তব ও বিজ্ঞানের কোনো সম্পর্ক নেই। পৃথিবীতে যুক্তিবাদের প্রসার হবে।
তথ্যসূত্র:
করোনা ভাইরাসের জন্ম ল্যাবেও নয়, ঈশ্বরের হাতেও নয়- প্রাকৃতিক বিবর্তনের ফসল
যখন এই মানুষগুলো দেখতে পাবেন এই মৃত্যু মিছিল দেখেও ঈশ্বর-গড-আল্লাহ চুপ করে আছে, যেই ভগবান তাদের বিপদ থেকে রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সেই ভগবান আজ বন্দি, শুধু বিজ্ঞান রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করছে, তখন নিশ্চিতরূপে অনেকের মধ্যে ধর্মবিশ্বাস লঘু হবে, ধর্মীয় উগ্ৰতা কমবে, অনেকেই তথাকথিত কাল্পনিক ঈশ্বর ত্যাগ করবেন। অনেকেই বুঝতে পারবেন ধর্ম কোনো ঈশ্বরের সৃষ্টি না, ধর্ম মানুষের মনগড়া কিছু কাহিনী যার সঙ্গে বাস্তব ও বিজ্ঞানের কোনো সম্পর্ক নেই। পৃথিবীতে যুক্তিবাদের প্রসার হবে।
তথ্যসূত্র:
করোনা ভাইরাসের জন্ম ল্যাবেও নয়, ঈশ্বরের হাতেও নয়- প্রাকৃতিক বিবর্তনের ফসল